আমাদের সংস্কৃতির ক্রমবিকাশ -আবু নাঈম মু. শহীদুল্লাহ্
মানুষের বিশ্বাস, আচার- আচরণ ও জীবনধারার নাম হলো সংস্কৃতি। চিন্তা ভাবনা, ধ্যান-ধারনা, জ্ঞান, দক্ষতা, শিল্প ও সাহিত্য হলো অবস্তুগত সংস্কৃতি। আর বাড়িঘর, আসবাবপত্র, তৈজসপত্র, ও উৎপাদনের যন্ত্রপাতি হলো বস্তগত সংস্কৃতি।
অধ্যাপিকা হেলেন স্পেনসার-ওটেইয়ের মতে : সংস্কৃতি হলো এমন কিছু বুনিয়াদি অনুমান, মূল্যবোধ ও জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির, বিশ্বাস, নীতিমালা, প্রক্রিয়া এবং আচরণিক প্রথার অস্পষ্ট সমষ্টি–যা এক দল মানুষ ভাগ করে নেয় এবং সেই সমষ্টি দলের প্রত্যেক সদস্যের আচরণকে এবং তার নিকট অন্য সদস্যের আচরণের ‘অর্থ’ বা সংজ্ঞায়নকে প্রভাবিত করে (কিন্তু নির্ধারিত করে না)।
কিন্তু যারা দুনিয়ার জীবন শেষে আরেকটি জীবন আছে যাকে আখেরাত বলা হয়; এ বিশ্বাস নিয়ে দিনাতিপাত করেন, তাদের সংস্কৃতি বা জীবন আচরণের সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়মনীতি বা বিধিব্যবস্থা রয়েছে। যেমন: আমরা যারা ইসলামকে নিজেদের দ্বীন মনে করি আমাদের সংস্কৃতি হলো ইসলামী সংস্কৃতি। যে সংস্কৃতির প্রবর্তক ছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এবং তা ইসলামী সমাজে প্রতিষ্ঠিত ছিল। সে সমাজের মানুষদের আচার-আচরণ, জীবনদর্শন, শিক্ষা, সাহিত্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প, ব্যবসায়-বাণিজ্য সর্বোপরি মানব জীবনের সামগ্রিক ব্যবস্থায় ইসলামী পদ্ধতি অনুসারে হতো।
মুসলিম দার্শনিক আল্লামা আবুল হাশিম তার ‘ক্রিড অব ইসলাম’ গ্রন্থে বলেন, ‘মানুষের শারীরিক ও মানসিক বৃত্তিগুলোর ইসলামী নীতি, আদর্শ ও শিক্ষাসম্মত উৎকর্ষসাধন পদ্ধতি এবং ব্যবহারিক জীবনে তার বাস্তব রূপ হলো ইসলামী সংস্কৃতি।
দুনিয়ার সকল সংস্কৃতি যে পাঁচটি মৌলিক উপাদান দ্বারা বেষ্টিত তা হলো-
১. দুনিয়াবী জীবন সম্পর্কে ধারণা। ২. জীবনের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য।
৩. বুনিয়াদী আকীদা ও চিন্তাধারা। ৪. ব্যক্তি প্রশিক্ষণ এবং ৫. সমাজব্যবস্থা।
ইসলামী সংস্কৃতির সৃষ্টিও হয়েছে এ উপদানের সাহায্যে। তাই মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও ধর্ম পালন, স্থানীয়, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক নিয়ম-পদ্ধতি, জীবনপ্রক্রিয়া ও ঐতিহ্যের যা কিছু ইসলাম অনুমোদন করে ও প্রতিফলিত হয় সেগুলোকেই ইসলামী সংস্কৃতি বলে।
আজকের পৃথিবীর জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ মুসলমানের পরিচিত, অস্তিত্ব, স্বকীয়তা, জাতিসত্তা, স্বাতন্ত্র্য, সাফল্য- এসবকিছুই ইসলামী সংস্কৃতির অধ্যয়ন, অনুশীলন ও অনুকরণের উপর নির্ভরশীল। ইসলামী সংস্কৃতি ঈমানের পূর্ণতা দান করে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে মুমিনগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে না।’ (সূরা আল বাকারা-২০৮)
ইসলামী সংস্কৃতির বাহিরে থেকে কেউ নিজেকে মুসলিম দাবী করা নেহায়েত বোকামী। কারন নবী করিম (সাঃ)-এর প্রতি আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ থেকে মানুষের জন্য যেসকল নিয়ম নীতি পাঠানো হয়েছে তা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা, মৌখিক স্বীকারোক্তি প্রদান ও সে অনুযায়ী আমল করাকে ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় ঈমান বলে। ইসলামী সংস্কৃতি হলো ঈমানের চূড়ান্ত পর্যায়। কেননা, এখানে ইসলামের নীতি ও দর্শন বাস্তবে রূপ লাভ করে। এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যদি আহলে কিতাবদের কোনো দলের অনুসরণ করো তাহলে ঈমান থেকে বিচ্যুত করে তারা তোমাদের কাফির হিসেবে প্রত্যাবর্তন করাবে।’ (সূরা আলে ইমরান-১০০)।
মুসলমানগণ ইসলামী সংস্কৃতি অনুশীলনের মাধ্যমে আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এর প্রতি নিজের আনুগত্যের বহিঃপ্রকাশ দেখায় এবং তাঁদের ভালোবাসা লাভ করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। আল্লাহ বলেন- ‘মুহাম্মদ (সাঃ) আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহর ভালোবাসা চাও তাহলে আমাকে অনুসরণ করো।’ (সূরা আলে ইমরান-৩১)
ঈমানদারগন ইসলামী সংস্কৃতি অনুশীলন ও অনুকরণের মাধ্যমে দুনিয়ার সাফল্য ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করবে। মুসলিম পরিচয় বহনকারী কোনো ব্যক্তি যদি বিজাতীয় সংস্কৃতি অনুসরণ করে তাহলে সে মুসলিম থেকে খারিজ হয়ে যাবে। এটা অনেকটা আম গাছে কাঠাল প্রত্যাশার মত। রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুসরণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ) আর তাই ইসলামী সংস্কৃতি হলো মুসলিম উম্মাহর অস্তিত্ব রক্ষার প্রধান উপায়।
আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকাসহ এ অঞ্চলে ইসলামী সংস্কৃতির প্রচলন শুরু হয় ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকে। ইতিহাস থেকে যতটুকু জানা যায় ভারতীয় অঞ্চলে ইসলামী সংস্কৃতির পরিচয় ঘটে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাহাবীদের আগমনের মাধ্যমে। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা আমিরুল মু’মেনিন হযরত উমর ফারুক (রাঃ) এর খিলাফতকালে।
১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উতবান
২. হযরত আছেম ইবনে আমর আত তামীমী
৩. হযরত ছুহার ইবনে আল আবদী
৪. হযরত সুহাইব ইবনে আদী এবং
৫. হযরত আল হাকাম ইবনে আবিল আছ আস সাফাফী (রাঃ) আমাদের এ অঞ্চলে আসেন। এরপর হযরত উসমান (রাঃ)-এর খিলাফতকালেও দুইজন সাহাবী এ অঞ্চলে আগমন করেছেন তারা হলেন-
১. হযরত উবাইদুল্লাহ ইবনে মা’মার আত-তামীমী ও
২. হযরত আব্দুর রহমান ইবনে সামুরা ইবনে হাবীর ইবনে আবদে শামস।
উমাইয়া খিলাফতের প্রথম খলিফা মুয়াবীয়া (রা:) এর যুগেও একজন আগমন করেছেন- হযরত সিনান ইবনে সালমাহ ইবনে আল মুহাব্বিক আল-হুযালী। তিনি ইরাকের শাসনকর্তা জিয়াদ এর ভারত প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত হয়ে এসেছিলেন।
উমাইয়া খিলাফতকালে বহুসংখ্যক তাবিঈও ভারতে আগমন করেছিলেন। আমীরে মুয়াবীয়ার যুগে সর্বপ্রথম যে তাবিঈ ভারতে আগমন করেন তিনি হলেন মুহলাব ইবনে আবু ছফরা। তিনি ৪৪ হিজরীত সাহাবী হযরত আব্দুর রহমান ইবনে সামুরা (রাঃ) এর সঙ্গে এসেছিলেন। বাংলাদেশের লালমনিরহাটের সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের মজদের আড়া গ্রামে ৬৯ হিজরীতে বা ৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত একটি প্রাচীন মসজিদের ধ্বংসাবশেষের সন্ধানে এযুগের মানুষের কাছে এটা পরিস্কার হয়েছে ।
পৃথিবী সেরা মানুষেরদের উন্নত চরিত্র ও সংস্কৃতি দেখে আমাদের অঞ্চলের মানুষগন খুব সহজে তা গ্রহন করেন। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত মুসলমান ও সাধারন মানুষদের আর্য বলা হয়। আর্যদের আগমনের আগে এ দেশীয়দের অনার্য বলে অভিহিত করা হয়। তখন এ দেশের জনগণের ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতি কিরূপ ছিল তা নিশ্চিতরূপে ধারণা করা কঠিন। তবে এ দেশে তখন যে ভাষা প্রচলিত ছিল, সেটাকে এক কথায় বলা হয় দেশীয় ভাষা। বাংলা নামটির উদ্ভব ঘটেছে অনেক পরে। যখন বাংলা নামের উদ্ভব ঘটেছে, তখন থেকে এদেশের ভাষা বাংলা ভাষা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। আর্যদের কেউ কেউ স্থায়ী বসতি গড়ে তুলতে থাকে। যারা স্থায়ীভাবে বসতি গড়ে তুলেছে, তাদের ভাষা-ধর্ম-সংস্কৃতির প্রভাব যেমন এখানে কমবেশি বিস্তৃত হয়েছে, অনুরূপভাবে তারাও কালক্রমে এ দেশের ভাষা-ধর্ম-সংস্কৃতির প্রভাব ধারণ করে এদেশের মানুষের সাথে একাত্ম হয়ে উঠেছে। কালক্রমে তাই এ ভূখণ্ড হয়ে উঠেছে একটি মিশ্র জাতি ও সংস্কৃতির দেশে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এ দেশে যখন যারা রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করেছে তখন তাদের ধর্ম-সংস্কৃতিই এদেশের প্রধান ধর্ম-সংস্কৃতি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এভাবেই বাংলাদেশ আদিকাল থেকে আর্য-অনার্য, শক-হুন-দ্রাবিড়, হিন্দু-বৌদ্ধ-জৈন-মুসলিম-খ্রিষ্
১৭৫৭ সালে পলাশীর ষড়যন্ত্রমূলক যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের পর ভারতবর্ষে খ্রিষ্টান ধর্মের আগমন ঘটে। ইংরেজদের দখলে চলে যাওয়া ভারতবর্ষকে পূর্নরুদ্ধারের জন্য মুসলমানগন সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। যেমন, মীর কাসেমের যুদ্ধ, ফকির মজনু শাহর বিদ্রোহ, হাজী শরীয়ত উল্লাহর ফরায়েজী আন্দোলন, তিতুমীরের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত সিপাহি বিদ্রোহ, অতঃপর ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ, ১৯০৬ সালে ঢাকায় নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ধাপে ধাপে বাঙালি তথা উপমহাদেশের মুসলিমগণ নিজেদের জন্য এক স্বতন্ত্র আবাসভূমি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়।
এই দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মূলে প্রধান অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক স্বতন্ত্র চেতনা ও স্বাধীন জাতিসত্তা বিকাশ। স্বতন্ত্র জাতিসত্তা ও স্বকীয় আদর্শ ও জীবন গঠনের প্রত্যয়ই তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের সুদৃঢ় প্রেরণা জোগায়। যার প্রতিফলন ঘটে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট (পাক+ইস্তান) মুসলমানদের জন্য পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। সময় ও মতের ব্যবধানে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়। নব্বই ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশে হিন্দুয়ানী সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ও অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠার অনুসারীদের ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির আন্দোলন ২০২৪ সালের ৫ই আগষ্টের বিজয়ের মূলে ছিল দেশপ্রেম ও ইসলামী সংস্কৃতি ।
সাংস্কৃতিক আগ্রাসন : যে কোনো জাতিকে ধ্বংস করতে হলে আগে তার সংস্কৃতি বিনাশ করতে হয়। সংস্কৃতির মধ্যেমে জাতি তার আত্মপরিচয় তুলে ধরে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ভেতর দিয়ে একটা দেশ ও জনগণের নিজস্ব ইতিহাস, মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের ধরন উলোটপালোট করে দেয়া হয় এবং তার আত্মপরিচয়কে অস্পষ্ট করে তোলা হয়। পরিণতিতে ওই দেশ বা জনগণের স্থির বিশ্বাস ও মূল্যবোধে চিড় ধরে এবং তারা এক দীর্ঘ হীনমন্যতার জালে জড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত একটা হীনমন্য জাতিতে পরিনত হয়ে পরাধীনতা স্বীকার করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ বাংলাদেশকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীনের পর থেকে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় সুদীর্ঘ পরিকল্পনা করে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন পরিচালনা করা হচ্ছে।
সর্বশ্রেণীর মানুষের কাছে ইসলামী সংস্কৃতি লালন-পালনকারীদের হেয় করার লক্ষ্যে নাটক ও সিনেমায় বির্তকিত চরিত্রে ইসলামপন্থীদের দেখানো হচ্ছে। লিভ টুগেদার, লাভ চাইল্ড, থার্টিফার্স্ট নাইট, ভ্যালেন্টাইনস ডে, মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ নানান কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদেরকে বিপথে পরিচালিত করার এক মহাকর্মযজ্ঞ পরিচালিত হচ্ছে।
আমাদের দেশের মানুষের মগজ ধোলাই চলছে এবং এদেশের জন্ম ইতিহাস সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ভারত অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। যার কারনে মুসলমান হয়েও আমরা সাংস্কৃতিক আইডেনটিটি ক্রাইসিসে ভুগছি। আগ্রাসনের ফলে আমরা আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের জাতীয় অগ্রনায়কদের ভুলতে বসেছি। যেমন নজরুল, ফররুখ, কায়কোবাদ, গোলাম মোস্তফা, শাহাদত্ হোসেন, সিরাজদ্দৌলা, রজব আলী, তিতুমীর, শরীয়তুল্লাহ, আমীর আলী, নওয়াব সলিমুল্লাহ প্রমুখ স্মরণীয় মানুষদেরকে আগ্রাসীরা অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। আমরা এমন এক অবস্থায় দাঁড়িয়েছি, মীর মশাররফ হোসেন কিংবা শাহেদ আলীর মতো কোনো কথাশিল্পী কিংবা ফজলুল হক, সোহরাওয়ার্দী, নাজিমুদ্দীন, আকরাম খান, আবুল হাশিমের মতো কোনো রাজনীতিবিদ বাংলাদেশে কখনও ছিলেন এটা বাহির করতে গবেষণা লাগবে! সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ছোবল থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা আমাদের রেডিও, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, নাটক, বিজ্ঞাপন শিল্প, সঙ্গীত, নাট্য বিদ্যালয়, আর্ট স্কুল, ফ্যাশন শো, মেলা, জাদুঘর, পেইন্টিং, শিক্ষাঙ্গন, লাইব্রেরি, খেলাধুলা, সংবাদপত্র, সাহিত্য, পাঠ্যপুস্তক, সেমিনার, এনজিও, রাজনৈতিক দর্শন,এবং ম্যাগাজিন ও সাময়িক পত্র। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনটাও একটা যুদ্ধ। এই যুদ্ধের শতশত মিসাইল ও বোমা এসে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ধর্মবিশ্বাসকে ভেঙে চুরমার করে দিতে চাইছে।
এ অবস্থায় আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে আপন সংস্কৃতির জন্য হুমকির বিষয়গুলো চিহ্নিত করে প্রতিরোধের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিতে হবে যে সংস্কৃতি কোনো স্রোতের শেওলা নয় কিংবা সার্বজনীন বিষয়ও নয়। বরং সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও মাতৃভূমির স্বকীয়তা।
-আবু নাঈম মু শহীদুল্লাহ্
সভাপতি, মুসলিম কমিউনিটি এসোসিয়েশন