অমুসলিমদের সাথে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) র আচরণ

পৃথিবীর সকল ফুলের সৌরভকে হার মানিয়েছিল যে সুগন্ধি, দুষিত বাতাস পরিনত হয়েছিল সুবাতাসে। অশান্ত পৃথিবীর শান্তি প্রিয় মানুষগুলোর মুক্তির দিশা মিলেছে যাকে পেয়ে। তিনি হলেন সাইয়েদুল মুরসালিন রহমাতুল্লিল আলামীন আমাদের আদর্শ নেতা মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ)। যার কোমলতা, উদারতা,স্নেহ ও প্রীতিপূর্ন ব্যাবহারে আরবসহ সারা দুনিয়ার কাছে পরিচিতি পেয়েছে উন্নত চরিত্র ও মহাউত্তম স্বভাবের এক মহামানব হিসাবে। যার আগমনের মুল উদ্দেশ্যই ছিল সমাজ সংস্কার করা মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের সুরা তাওবার ৩৩ নং আয়াতে বলেন – তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীন সহ প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি একে সকল দীনের উপর বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা অপছন্দ করে। প্রিয় পাঠক আমার আজকের বিষয় “অমুসলিমদের সাথে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর আচরণ”
নবুওয়তের পূর্বে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর আচরণঃ-
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার হাবিবকে শুধু কুরাইশ বংশ থেকে বনি সা’দ গোত্র পর্যন্ত নয়। বরং পুরো আরবের মানুষের কাছে আল আমিন, আস সাদিক ও মানবতাবাদী হিসাবে পরিচিত করিয়াছেন। তিনি প্রতিপালিত হয়েছেন বিশেষ নিরাপদ ও কালিমামুক্ত পরিবেশে এবং জাহিলিয়াতের নাপাক ও খারাপ অভ্যাসগুলো থেকে আল্লাহ তাঁকে সর্বদাই দূরে ও মুক্ত রেখেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁকে সব ধরনের মানবিক, চারিত্রিক ও নৈতিক দুর্বলতা, স্খলন ও ত্রুটির ঊর্ধ্বে রেখেছেন। রিসালাতের পূর্বেই তিনি প্রশংসনীয় গুণাবলি, উন্নত মনোবল, উত্তম চরিত্রের অধিকারী, লাজনম্র, সত্যবাদী, আমানতদার হিসেবে সকলের নিকট পরিচিত ছিলেন। কটূক্তি ও অশ্লীল বাক্য উচ্চারণ এবং গান বাজনা থেকেও দুরে ছিলেন।
রাসুলুল্লাহ সাঃ নবুয়তের পূর্বে বন্ধুবান্ধব ও অসহায় লোকদের সাথে কেমন দরদী ও মানবতাবাদী আচরণ করেছেন। তার কিঞ্চিত কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করছি –
একবার তিনি বকরি ও উট চরানোর সময় সাথীদের কাছে পশু রেখে দুই দিনের জন্য মক্কা নগরীতে রাতের আনন্দ আড্ডায় অংশ নিতে বন্ধুদের সাথে এসছিলেন । সেখানে গান-বাজনা হচ্ছিল। দুই দিনই আল্লাহ তাঁর কান বন্ধ করে দেন এবং তিনি ঘুমিয়ে পড়েন, এর মাধ্যমে আল্লাহ তাকে হেফাজত করেছেন। তিনি বন্ধুদের কাউকে দোষারোপ করেননি বলেন নি যে তোমরা আমাকে এখানে এনেছ তাই আমি অসুস্থ হয়েছি। বরং তিনি অত্যান্ত নরম ভাষায় বলেছিলেন চলো আমরা আমাদের বকরি গুলো দেখাশোনার কাজে মনোযোগ দেই।
আরেকবার মক্কায় চরম দুর্ভিক্ষ ও অনাবৃষ্টি দেখা দিলে কোরাইশ বংশের লোকেরা বৃষ্টির জন্য দোয়া করতে নবীজির চাচা আবু তালিবের কাছে আবেদন জানায়। তখন তিনি মুহাম্মদ (সা.)-কে সঙ্গে নিয়ে কাবার সামনে এলেন এবং তাঁর পিঠ কাবার দেয়ালে ঠেকিয়ে দিলেন এবং বৃষ্টির জন্য দোয়া করলেন। অল্পক্ষণের মধ্যে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলো। শহর-প্রান্তর সজীব, উর্বর হয়ে গেল। এতে মক্কার মানুষ বালক মুহাম্মদ সাঃ কে নিয়ে অনেক ভাল মন্তব্য ও কাব্য বলতে শুরু করেন। কিন্তু তিনি এ নিয়ে কোন ভাব বা নিজেকে উচুমানের কিছু মনে করেন নি। বরং নবুয়তের আগেও তিনি মানুষের প্রয়োজনে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন।
নবুয়তের আগে মহানবী (সা.) নিজের ও চাচা আবু তালিবের পরিবারের জীবিকা নির্বাহের জন্য ‘কয়েক কিরাতে’র (স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রার বিপরীতে পয়সার মর্যাদায় ব্যবহৃত হতো) বিনিময়ে মক্কার লোকদের পশু চরাতেন। এ ছাড়া ছোট ছোট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ব্যাবসায়িক অংশীদার আবদুল্লাহ ইবনে সায়িব (রা.) মহানবী (সা.)-কে সম্বোধন করে বলেন, ‘আপনি আমার অংশীদার ছিলেন। কতই না উত্তম অংশীদার। যে কখনো কথা ভঙ্গ করেনি এবং যে কখনো ঝগড়া করেনি।
ইসলামের আগমনের পূর্বেও তিনি অসহায়দের পক্ষে জালিমের বিপক্ষে অবস্থান করেছেন হিলফুল ফুযুল তার অন্যতম দৃষ্টান্ত। মক্কায় ব্যবসা করতে আসা জুবাইদ এর মালামাল ক্রয় করেন আস বিন ওয়ায়িল সাহমী। কিন্তু আস বিন ওয়ায়িল সাহমী তাঁর প্রাপ্য তাঁকে না দিয়ে তা আটক রাখেন। এ ব্যাপারে জুবাইদ আরবের গোত্রগুলোর কাছে সহযোগিতা চেয়ে ব্যর্থ হয়। জুবাইদ ব্যথিত মন নিয়ে জাবালে আবূ কুবাইশ পর্বতের চূড়ায় উঠে উচ্চ কণ্ঠে নিজের অত্যাচার-উৎপীড়নের মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টিও বর্ণনা করেন। যা শুনে জুবাইর বিন আব্দুল মুত্তালিব ও বালক মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ (সাঃ) গোত্র গুলোকে একটি সন্ধিচুক্তি করেন এবং পরে আস বিন ওয়ায়িলের নিকট থেকে জুবাইরের পাওনা আদায় করে দেয়া হয়।
শুধু নিজ গোত্র বা নিজস্ব বন্ধু/সাথীদের সাথে ভাল আচরন করেছেন এমন নয়। বরং এরকম হাজারো সদাচারনের দৃষ্টান্ত আমরা দেখতে পাই,যা তিনি অসহায় মানুষের জন্য করেছেন।
নবুয়ত প্রাপ্তির পর অমুসলিমদের সাথে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর আচরণঃ-
অশান্ত পৃথিবীর শান্তির দূত নবী কারীম (সাঃ) এর উপর রিসালাতের দায়িত্ব আশার পর। উনি আগের চাইতে আরো বেশী প্রেমময়ী, উদার ও মানবতাবাদিতার পরিচয়ে পরিচিত হয়েছেন। তিনি এমন এক জীবনব্যবস্থা নিয়ে এসেছেন যার মাঝে বিশ্বসমাজ গড়ে তোলার সব উপাদান, মাধুর্য ও উদারতা বিদ্যমান। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন: নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি – যেন তুমি তদনুযায়ী মানবদেরকে আদেশ প্রদান কর, যা আল্লাহ তোমাকে শিক্ষা দান করেছেন এবং তুমি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষে বিতর্ককারী হয়োনা। (সুরা নিসা ১০৫)
তার আদর্শ থেকে আমরা যে সকল অনুপম আদর্শের শিক্ষা পাই। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভিন্নমতাবলম্বীদের সাথে আচরণের মাপকাঠি।
হযরত সাহল ইবনে হুনাইফ ও হযরত কায়েস ইবনে সাদ রা. একদিন এক স্থানে বসা ছিলেন। তারা তখন কাদিসিয়ায় থাকেন। পাশ দিয়ে একটি লাশ নেয়া হচ্ছিল। তা দেখে তারা দুজনই দাঁড়ালেন। উপস্থিত লোকেরা তাদেরকে জানাল, ‘এ এক অমুসলিমের লাশ।’ তারা তখন শোনালেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাশ দিয়েও একবার এক লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তিনি যখন তা দেখে দাঁড়ালেন, উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম তখন বললেন, এ তো ইহুদির লাশ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, أليست نفسا অর্থাৎ ‘সে মানুষ ছিল তো?’ (বুখারি ১৩১২)
এ বিষয়ে হযরত জাবের রা. বর্ণনা করেন একদিন আমাদের পাশ দিয়ে একটি লাশ নিয়ে যাচ্ছিলো। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন। তার দেখাদেখি আমরাও দাঁড়ালাম। আমরা তাকে বললাম, ‘ইয়া রসুলাল্লাহ! এ তো এক ইহুদির লাশ! রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘যখন কোনো লাশ নিতে দেখবে, তখন দাঁড়াবে।’ (বুখারি ১৩১১)”
অমুসলিমদের সাথে আচরণে ভদ্রতা ও সৌজন্য রক্ষা করার জন্যে ইসলাম যে উদার নির্দেশনা দেয়, উপরের হাদিসটিই তার প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট। অমুসলিমদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সম্পর্ক ও কথাবার্তা বলা বৈধ। যদি প্রয়োজন হয় মসজিদেও তারা বসতে পারবে।আমরা জানি যখন সাকিফ গোত্রের প্রতিনিধি রসুল সা.-এর দরবারে হাজির হয়েছে, তখন তারা মসজিদের শেষে গম্বুজের কাছে অবস্থান করে। আর যখন নামাজের সময় হলো, দলের একজন লোক বলল, হে আল্লাহর রসুল, নামাজের সময় হয়েছে। এরা একদল অমুসলিম, তারা মসজিদে আছে। তখন রসুল সা. বলেন, ‘অমুসলিমদের কারণে জমিন নাপাক হয় না।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ৮৫৭৬)
কোনো অমুসলিম অসুস্থ হয়ে পড়লে রসুল্লাহ সা. তাকে দেখতে যেতেন। অমুসলিম রোগীকে দেখতে যাওয়া সুন্নত। নবী করিম সা. অমুসলিম রোগীদের দেখতে যেতেন। তাদের ঈমানের দাওয়াত দিতেন। তাদের সেবা করতেন। হযরত আনাস রা. বলেন, এক ইহুদি দাস নবী করিম সা.-এর খেদমত করত। যখন সে অসুস্থ হলো, তখন মহানবী সা. তাকে দেখতে গেলেন, তার মাথার দিকে বসলেন আর তাকে বলেন, তুমি ইসলাম গ্রহণ করো! তখন সে তার পিতার দিকে দেখল। পিতা বলেন, তুমি আবুল কাসেমের অনুসরণ করো, ফলে সে ইসলাম গ্রহণ করল। তখন নবী সা. এই বলে বের হলেন, আল্লাহর শোকরিয়া, যিনি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিলেন।’ (বুখারি ১২৫৬)
কোনো অমুসলিম মৃত্যু বরণ করলে তাদের সম্পর্কে রসুল সা. বলেন, তাদের জীবিতের যেমন হক রয়েছে, তেমনি মৃতেরও হক রয়েছে। প্রয়োজনে তাদের দাফন বা সৎকারে সহযোগিতা করতে হবে। কেননা তারা শ্রেষ্ঠ মাখলুক তথা মানবজাতির অন্তর্ভুক্ত। অমুসলিমদের অন্যায়ভাবে হত্যা করা নিষেধ। যেসব অমুসলিম মুসলিম দেশে জিম্মি হিসেবে (মুসলিম রাষ্ট্রের আইন মেনে) বসবাস করে, তাদের হত্যা করা যাবে না। তেমনি যারা ভিসা নিয়ে মুসলিম দেশে আসে, তাদের হত্যা করা যাবে না। তাদের জানমালের নিরাপত্তা মুসলমানদের মতোই অপরিহার্য। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করল, সে জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না, অথচ তার সুগন্ধি ৪০ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়। (বুখারি ৩১৬৬)
অমুসলিমদের সহযোগিতা করার বিষয়েও রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সুন্নাহ হচ্ছে – যাকাত ছাড়া অন্য দান বা সাদকা করা যাবে৷ সদকা শব্দটি সাধারণত নফল দান-অনুদান বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। সেই অর্থে যেকোনো অমুসলিমকে দান করা সব আলেমের ঐকমত্যে বৈধ। অমুসলিম প্রতিবেশী আক্রান্ত হলে, তারা বিপদগ্রস্ত হলে মুসলমানদের উচিত তাদের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর রা. বৃদ্ধ ইহুদির জন্যে রাষ্ট্রীয় সম্পদ থেকে ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন- এটা তো তিনি শাসক হিসেবে করতেই পারেন। কিন্তু তিনি সেই ইহুদিকে লক্ষ করে যে কথাটি বললেন, তা আমাদের সামনে চিন্তার নতুন দুয়ার খুলে দিতে পারে। যে সহানুভূতি তিনি প্রকাশ করেছেন এটাই ইসলামের সৌন্দর্য ও আসল চরিত্র। তবে ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি জাকাত অমুসলিমদের দেওয়া যাবে না। শুধু যাকাতের ক্ষেত্রে বিধানের স্বাতন্ত্র্য ধরে রাখা হয়েছে, অন্যথায় যেকোনো দান-সদকা, এমনকি ফিতরাও অমুসলিমদের দেওয়া যায়। এখানে লক্ষণীয় যে যাকাত দিতে হয় বছরে একবার। মুসলিম ধনীদের মধ্যে কারো প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা কিংবা এর অর্থমূল্য পরিমাণ সম্পদ মজুদ থাকলে এবং এর ওপর পূর্ণ এক বছর অতিবাহিত হলে তার ওপর জাকাত ওয়াজিব হয়। এটি ধনীদের সম্পদ থেকে ২.৫ শতাংশ আদায় করতে হয়। অন্যদিকে সদকা বছরের যেকোনো সময় অনির্দিষ্ট পরিমাণ মুসলিম-অমুসলিম সবাইকে দেওয়া যায়। তা ছাড়া সদকা ধনীরা ছাড়াও মোটামুটি সচ্ছল যে কেউ আদায় করতে পারে। সমাজবদ্ধভাবে জীবনযাপন করতে গিয়ে নানা শ্রেণির, নানা পেশার, নানা মত ও পথের মানুষের মুখোমুখি হতে হয়। মুখোমুখি হতে হয় অমুসলিমদেরও। অমুসলিম ব্যক্তি হতে পারে কোনো মুসলমানের প্রতিবেশী। যদি কারো প্রতিবেশী কিংবা কোনো আত্মীয় অমুসলিম হয়, ইসলামের নির্দেশনা হলো—তার সঙ্গেও প্রতিবেশী বা আত্মীয়তার অধিকার রক্ষা করে চলতে হবে। রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা.-এর ঘটনা। একদিন তার ঘরে একটি বকরি জবাই করা হল। খাবার রান্না হলে তিনি তার গোলামকে জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের ইহুদি প্রতিবেশীকে কি এ খাবার দিয়েছ?’ এরপর তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, প্রতিবেশীর বিষয়ে জিবরাইল আমাকে এত উপদেশ দিচ্ছিলেন, আমি মনে করছিলাম, তিনি হয়ত তাদেরকে ওয়ারিশই বানিয়ে দেবেন। (তিরমিজি ১৯৪৩)
পবিত্র কোরআন ও হাদিসে সুস্পষ্ট ভাষায় অমুসলিম হওয়া সত্ত্বেও সম্পর্ক রক্ষা করতে বলা হয়েছে।
আল্লাহ বলেন, তোমার পিতা-মাতা যদি এমন কাউকে (প্রভুত্বে) আমার সমকক্ষ সাব্যস্ত করার জন্য তোমাকে চাপ দেয়, যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান (দলিল ও প্রমাণ) নেই, তবে তাদের কথা মানবে না। তবে দুনিয়ায় তাদের সঙ্গে সদাচরণ করো। আর এমন ব্যক্তির পথ অনুসরণ করো, যে একান্তভাবে আমার অভিমুখী হয়েছে। তারপর তোমাদের সবাইকে আমার কাছে ফিরে আসতে হবে। তখন আমি তোমাদের সে বিষয়ে অবহিত করব, যা তোমরা করতে। (সুরা লোকমান ১৫)
হযরত আসমা বিনতে আবি বকর রা. বলেন, রসুলের যুগে আমার মা আমার কাছে এলেন, তখন তিনি মুশরিক ছিলেন। তখন আমি রসুল (সা.-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমার মা এসেছেন। তিনি ইসলাম ধর্মবিমুখ (অমুসলিম)। আমি কি তার আত্মীয়তা রক্ষা করব? তিনি বলেন, হ্যাঁ, তার সঙ্গে আত্মীয়তা রক্ষা করো। (বুখারি ২৬২০)
লেখক: আবু নাঈম মু শহীদুল্লাহ্
সভাপতি, পর্তুগাল মুসলিম কমিউনিটি এসোসিয়েশন