বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমান বনাম ইয়াহুদী -আবু নাঈম মু শহীদুল্লাহ
ফিলিস্তিনের গাজায় অবস্থিত বায়তুল মুকাদ্দাস বা মসজিদুল আকসা মুসলমানদের প্রানের চেয়েও প্রিয় একটি স্থানের নাম । কারণ মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম, হজরত ইসহাক, ইয়াকুব, মুসা, দাউদ, সুলাইমান ও ঈসা আলাইহুমুস সালামের দাওয়াতে ইসলাম গ্রহণকারীগন এ ফিলিস্তিনে বসববাস করতেন, এছাড়াও আরও অনেক নবীর পদচারণে ধন্য হয়েছিল প্রিয় আল আকসা । পৃথিবীর ২য় স্থাপনা বা ২য় বাড়ি আল আকসা মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র ও সম্মানিত স্থান,মুসলমানদের প্রথম কেবলা। মসজিদুল আকসা (অর্থ দূরবর্তী মসজিদ) সম্পর্কে আবূ যার (রাজি:) বলেন: আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বললাম “হে আল্লাহর রাসূল! পৃথিবীতে সর্বপ্রথম কোন মসজিদ তৈরি করা হয়েছে? তিনি বললেন, মসজিদে হারাম। আমি বললাম, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, মসজিদে আকসা। আমি বললাম, উভয় মসজিদের (তৈরির) মাঝে কত বছর ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, চল্লিশ বছর”। অধিকাংশ মুফাসসেরীনদের মতে, আদম আলাইহিস – সালাম কাবাঘর নির্মাণের ৪০ বছর পর মসজিদুল আকসা তৈরি করেন ।আবার ঐতিহাসিকগন মনে করেন মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম (আ:)কাবাঘর পুনঃসংস্কারের ৪০ বছর পর মসজিদুল আকসা তৈরি করেন।
আমরা মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম (আ:) থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো একনজরে আলোচনা করছি-
মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম (আ:) এর পুত্র ইসহাক( আ:) এখানেই বসবাস করতেন,তারপুত্র ইয়াকুব (আ:) এবং তার ১২ পুত্রসহ ফিলিস্তিনেই বসবাস করছেন। অতঃপর তাঁর ১২ সন্তান থেকে ১২টি গোত্রের আবির্ভাব ঘটে; এরা সকলেই বানী ইসরাঈল তথা (ইয়াকুবের) সন্তান। উল্লেখ্য যে হযরত ইয়াকুব (আ:) এর নামই হচ্ছে ইসরাঈল।
অতঃপর নবী সুলায়মান (আ:) মসজিদুল আকসা পুনঃসংস্কার করেন ১০০৪ খ্রিস্টপূর্বে। অনেকে এ ধারণা করেন যে হযরত সুলায়মান (আ:) প্রথম মসজিদুল আকসা তৈরি করেছেন, কিন্তু এটা ভুল তথ্য। কারণ ইবরাহীম (আ:) আর সুলাইমান (আ:)-এর মাঝে প্রায় ১০০০ বছরের পার্থক্য।
রাসূল (সা:) বলেন সুলায়মান ইবনু দাঊদ (আ:) যখন বায়তুল মাকদিস নির্মাণ করলেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে তিনটি বস্তু চাইলেন: তিনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলেন এমন ফয়সালা, যা তাঁর ফয়সালার মোতাবেক হয়। তা তাকে প্রদান করা হলো। আর তিনি আল্লাহর নিকট চাইলেন এমন বিশাল রাজ্য, যার অধিকারী তার পরে আর কেউ হবে না। তাও তাকে দেওয়া হলো। আর যখন তিনি মসজিদ নির্মাণের কাজ সমাপ্ত করলেন; তখন তিনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলেন, যে-ব্যক্তি তাতে শুধু সালাতের জন্য আগমন করবে, তাকে যেন পাপ থেকে ওই দিনের মতো মুক্ত করে দেন, যে-দিন সে তার মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল।
হযরত সুলায়মান (আ:)-এর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই বনী ইসরাঈল তথা ইয়াহুদীদের মধ্যে বিচ্যুতি এবং তাদের হুকুমত ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় বিভক্তি দেখা দেয়। তা ছাড়া তারা অগণিত নাফরমানিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। শুধু তাই না তারা তাদের নিকট প্রেরিত অসংখ্য নবী-রাসূলদেরকেও হত্যা করে।
হযরত দাউদ (আ:) ও সুলায়মান (আ:) ১০১০-৯৩১ খ্রি.পূ. পর্যন্ত বায়তুল মাকদাস শাসন করেছেন। সুলায়মান (আ:) খ্রি.পূ. ৯৩১ সালে ইন্তেকাল করেন।
বর্তমান পরিবর্তিত তাওরাতের রাজন্যবর্গ ও শাসকদের প্রথম পুস্তিকায় সুলায়মান (আ:)-এর ওপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা হয়েছে এভাবে যে, তিনি মহান আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি বর্জন করে মূর্তিপূজা করতেন। নাউযুবিল্লাহ। আর এ কারণেই ইয়াহুদীরা আল্লাহর গযবে পতিত হয় এবং বায়তুল মাকদাসের মতো পবিত্র ভূমি থেকে বিতাড়িত হয়। আমি বায়তুল মুকাদ্দাস ও ইয়াহুদীদের উপর বিভিন্ন জাতির আধিপত্যের ইতিহাস সংক্ষেপে তুলে ধরলাম।
ইহুদীদের উত্থান-পতনের ইতিহাস
১. আরামীয়দের আধিপত্য: নবী সুলাইমান (আ:) মৃত্যুর কিছুদিন পর (খ্রি.পূ. ৮৭৪- খ্রি.পূ. ৮৫৩ সালের মধ্যে) আরামীয় সেনাবাহিনী বাইতুল মুকাদ্দাসে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং সেখানকার সকল ইয়াহুদী নেতাকে হত্যা করে সমস্ত ধনসম্পদ লুট করে।
২. আশুরীয়দের আধিপত্য: ৮৫৯-৮২৪ খ্রি.পূ. পর্যন্ত ইয়াহুদীদের উপর আশুরীয়দের আধিপত্যের সূত্রপাত ঘটে।
৩. বাবেলীয়দের আধিপত্য: বাদশা বাখতু নাসর, যিনি শাম ও ফিলিস্তিনকে নিজ শাসনাধীনে আনার জন্য খ্রি.পূ. ৫৯৭ সালে প্রথম বার এবং খ্রি.পূ. ৫৮৬ সালে দ্বিতীয় বার সেখানে আক্রমণ করেছিলেন। বিরাট সংখ্যক ইয়াহুদীদের হত্যা করেন এবং বন্দিদেরকে বাবিলের (ব্যাবিলনের) খাবূর নদীর কাছে নাইবূর এলাকায় নির্বাসিত করেন।
৪. ইরানীদের আধিপত্য: পারস্য-সম্রাট সাইরাস বাবেল নগরী দখল করে খ্রিস্টপূর্ব ৫৩৯ সালে, বাখতুন নাসরের বন্দিদেরকে এবং যেসব ইয়াহুদী বাবেলে বসবাস করত, তাদেরকে আল কুদসে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেন এবং তাদের উপাসনালয় সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করার অনুমতি দেন। সেই প্রথম ইরানী, যে না কি ইয়াহুদীদের লালনপালন করেন।
৫. গ্রিকদের আধিপত্য: গ্রিকসম্রাট ইস্কান্দার আলেকজান্ডার খ্রি.পূ. ৩৩১ সালে মিশর, শাম ও ফিলিস্তিনে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে ইরানীদের উৎখাত করেন। এতে ইয়াহুদীরাও গ্রীকদের অধীনে চলে আসে।
৬. রোমীয়দের আধিপত্যে: রোম-সম্রাট বোম্বেই খ্রি. পূ. ৬৪ সালে সিরিয়া দখল করেন। পরের বছর তিনি আল-কুদস দখল করেন। ইনজিলসমূহের বিবরণ অনুসারে রোম-সম্রাট দ্বিতীয় হেরোডিস খ্রি.পূ. ৪ সাল থেকে ৩৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইয়াহুদীদের শাসন করেন এবং তার যুগেই ঈসা (আ:) জন্মগ্রহণ করেন।
৭. রোমান সম্রাট তিতুস ৭০ খ্রিস্টাব্দে আল-কুদসে আক্রমণ করে সেখানকার হাজার হাজার ইয়াহুদীকে হত্যা এবং তাদের বাড়ি-ঘর ধ্বংস করেন। ঠিক এ সময় ইয়াহুদীরা মদীনায় হিজরত করে।
৮.রোমান সম্রাট হাদরিয়ান ১৩২থেকে ১৩৫ খ্রিস্টাব্দে বাইতুল মাকদিস থেকে ইয়াহুদীদের উচ্ছেদ করেন। সবশেষে আবার রোমান সম্রাট হেরাক্লিয়াস ইয়াহুদীদেরকে শাস্তি দেন এবং আল-কুদসে যে ইয়াহুদী ছিল, তাদের সেখান থেকে বহিষ্কার করেন; আর এভাবে খ্রিস্টানদের পক্ষ থেকে এ শহর ইয়াহুদীদের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় ।
ইয়াহুদী জাতি নিজেদের ‘আল্লাহ কর্তৃক নির্বাচিত জাতি’ হিসেবে গণ্য করে। নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে, অন্যান্য জাতিকে হীন এমনকী চতুষ্পদ জন্তু বলে গণ্য করে; অথচ তাদের মধ্যে জগতের সকল নিকৃষ্ট ও জঘন্য কার্যকলাপ বিদ্যমান। তারা সেই আদিকাল থেকেই পৃথিবীর বুকে নানান অশান্তি, যুদ্ধবিগ্রহ বাঁধাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
আমি আগেও উল্লেখ্য করেছি ইয়াহুদী এমন একটি জাতি, যাদের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহুসংখ্যক নবী ও রাসূল হত্যার ইতিহাস। তারা নবী ইয়াহইয়া (আ:)-কে হত্যা করেছে, নবী যাকারিয়া (আ:)-কে করাত দিয়ে চিরে দুই টুকরা করে ফেলেছে। ঈসা (আ:)-কেও হত্যার দাবি করেছিল।
ইয়াহুদীরা পবিত্র ও সচ্চরিত্রা নারী মরিয়ম [আ:]-এর ওপর ব্যভিচারের জঘন্য অপবাদ আরোপ করেছিল। উল্লিখিত সংক্ষিপ্ত ইতিহাস থেকে জানা যায়–ইয়াহুদীরা আল্লাহর নানাবিধ নাফরমানি ও নবী-রাসূলদের হত্যা করার কারণে তাদের উপর লানত বর্ষিত হয়েছিল। যার কারণে তারা আর তাদের বসতবাড়ি এবং বায়তুল মাকদাস ফিরে পায়নি।
ইসলামী যুগ: সাইয়্যেদুল মুরসালীন মুহাম্মাদ (সাঃ) মদীনায় হিজরতের এক বছর পূর্বে রাতেরবেলায় মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় সফর করেন, যাকে ইসরা বলা হয়। অতঃপর সেখানে রাসূল (সাঃ) নবী-রাসূলদের নিয়ে ইমামতি করে সালাত আদায় করেন। সালাত শেষে ঊর্ধ্বাকাশে গমন করেন, যাকে মিরাজ বলা হয়। বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের প্রথম কেবলা ছিল, যা হিজরতের ১৭ মাস পর কাবার দিকে কেবলা ঘুরে যায়।
খুলাফায়ে রাশেদার যুগ: দ্বিতীয় খলীফা উমার ইবনুল খাত্তাব (রাজিঃ) ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে অর্থাৎ হিজরী ১৮ সালে যখন আল-কুদস ও ফিলিস্তিন জয় করেন। তখন খ্রিস্টানরা খলীফার কাছে শর্তারোপ করেছিল যে, কোনো ইয়াহুদী যেন সেখানে বসবাস না করে এবং তিনিও তাদের ইচ্ছার প্রতি ইতিবাচক সাড়া দেন এবং এ বিষয়টি তাদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিপত্রে লিপিবদ্ধ করেন। তখন থেকে ১৩৪৩ হিজরী অর্থাৎ ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাশ্চাত্যের হাতে তুর্কী উসমানী খিলাফতের পতন না হওয়া পর্যন্ত বাইতুল মাকদাস ইয়াহুদী মুক্ত ছিল। প্রায় ১৮০০ বছর ইয়াহুদীরা বাইতুল মাকদিসে বসবাসের সুযোগ পায়নি। উল্লেখ্য যে উমার (রাজি:)এর যুগে ১৮-৪০ হিজরী পর্যন্ত মোট ২২ বছর বাইতুল মাকদাস মুসলিমদের অন্যতম প্রদেশ ছিল। আলহামদুলিল্লাহ।
উমাইয়া (৪১ হিজরী থেকে ১৩২ হিজরী) শাসনামলের ৯০ বছর: এই নব্বই বছর পুরোটাই বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের হাতে ছিল। উমাইয়া শাসনামলে বাইতুল মাকদাসে উল্লেখযোগ্য কর্ম হলো, বর্তমান স্থাপনাটি উমাইয়া যুগেই নির্মিত। উমাইয়া খলীফা আবদুল মালিক ৬৯০ খ্রিস্টাব্দে মসজিদ পুনর্নির্মাণ ও সম্প্রসারণ করেন। সেই সঙ্গে তিনি ‘কুব্বাত আস-সাখরা’ নির্মাণ করেন।
আব্বাসীয় (১৩২-৬৫৬ হিজরী) শাসনামলের ৫২৪ বছর: আব্বাসীয় শাসনামলের ৫২৪ বছরের মধ্য ৩৬০ বছর বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের দখলেই ছিল। অতঃপর আব্বাসীয় শাসনামলের শেষের দিকে ৪৯২ হিজরী মোতাবেক ১০৯৯ খ্রিস্টাব্দে খ্রিস্টান ক্রুসেডাররা বাইতুল মাকদাস দখল করে নেয় এবং হাজার হাজার মুসলিমদের হত্যা করে। আর এর পিছনে তৎকালীন মিথ্যা ফাতেমী দাবিদার মিশরের শীআ শাসকগোষ্ঠী ক্রুসেডারদের আহ্বান করে এবং ফিলিস্তিন দখলের আমন্ত্রণ জানায়। এর ফলে অতি সহজে খ্রিস্টান ক্রুসেডাররা বাইতুল মাকদাস দখল করে নেয়।
৫৮৩ হিজরী মোতাবেক ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম বীর সিপাহসালার সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবী হিত্তিন প্রান্তরে ক্রুসেডারদের পরাজিত করে পুনরায় জেরুযালেম শহর ও বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের অধিকারে নিয়ে আসেন। আলহামদুলিল্লাহ।
মামলুকীদের (৬৪৮ হিজরী থেকে ৯২৩ হিজরী) শাসনামলে ২৭৫ বছর: এই ২৭৫ বছর পুরোটাই বাইতুল মাকদাস–সুন্নী মামলুকী মুসলমানদের হাতেই ছিল, যদিও তারা খ্রিস্টান ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে জিহাদরত ছিলেন।
উসমানীয় (৯২৩ হিজরী থেকে ১৩৪৪ হিজরী) শাসনামলের ৪০০ বছর প্রায় পুরোটাই বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের দখলে ছিল। অটোমান বা উসমানীয় শাসনের শেষদিকে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা ফিলিস্তিনে অনুপ্রবেশ করে এবং ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৪৪ সালে জার্মানীতে হিটলার যখন ৬০ হাজার ইয়াহুদীকে হত্যা করে কিছু ইয়াহুদী জীবিত ছেড়ে দিয়ে বলেছিলো: কিছুকে রাখলাম যাতে দুনিয়ার মানুষ বুঝতে পারে ওরা কি জিনিষ।
দখলদার ও অকৃতজ্ঞ ইয়াহুদীদেরকে জার্মান যখন জার্মান থেকে বহিস্কৃত ফিলিস্তিনে আসা প্রথম ইহুদী গ্রুপ
এই সময় দুনিয়ার কোন দেশ ইহুদীকে আশ্রয় দিচ্ছিলো না। রাশিয়া, বৃটিন, আমেরিকা, ফ্রান্স কেউ না। যে দেশেই তারা জাহাজের নোঙর দিয়েছে তারাই তাড়িয়ে দিয়েছে। অবশেষে তারা নিজের জাহাজে বসে একটি আবেদন প্রকাশ করে, যাতে লেখা ছিলো; The German destroyed our familis & homes, don’t you destroy our hopes’
জার্মানীরা আমাদের ঘর ও পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে তোমাদের কাছে আমাদের বিশ্বাস তোমরা আমাদের আশা ধ্বংস করবে না। আশ্রয় প্রার্থী হয়ে আমরা ফিলিস্তিনে এসেছি।’ তাদের এই আবেদনের ভিত্তিতে মানবিক কারণে ফিলিস্তিনীরা ইহুদিদেরকে আশ্রয় দিয়ে নতুন জীবন দান করেছিলো। ফিলিস্তিনীরা সেদিন তাদের বাড়ী-জমিন দিয়ে সাহায্য করেছিলো। এই ইহুদীরা পরবর্তীতে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্টা করে ফিলিস্তিনীদের উপর জুলুম নির্যাতন করে সেই এহসানের পূর্ণাঙ্গ বদলা দিলো।মুসলমানদের সঙ্গে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দাঙ্গা নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়। একটা সময়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা অন্যায়ভাবে মুসলমানদের ফিলিস্তিন ভূমিকে মুসলমান ও ইয়াহুদীদের মধ্যে ভাগ করে দেয়। ফলে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ১৫ মে বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে জায়নবাদী অবৈধ ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা রাষ্ট্র ইসরায়েল ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে ‘মসজিদুল আকসা’ জবরদখল করে নেয় এবং জায়নবাদী ইসরায়েল একের পর এক মুসলিম–অধ্যুষিত এলাকা দখল করে ইয়াহুদী বসতি সম্প্রসারণ অব্যাহত রেখেছে এবং হত্যা-গুম চালিয়ে যাচ্ছে।এ অন্যায় ও জুলুমের প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত প্রত্যেক মুসলমান ও মানবতাবাদীদের । বিশ্বমানবতার মহান শিক্ষক সাইয়্যেদিনা মুহাম্মাদ (সাঃ)বলেছেন :
“তোমাদের কেউ যদি কোনো খারাপ কাজ বা বিষয় দেখে তাহলে সে যেন হাত দিয়ে তা পরিবর্তন করে দেয়, যদি তা করতে অপারগ হয় তাহলে যেন মুখ দিয়ে তার প্রতিবাদ করে, যদি তাও করতে সক্ষম না হয় তাহলে যেন অন্তর দিয়ে তা ঘৃণা করে, আর এটাই হচ্ছে ঈমানের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বলতম স্তর।”
(বুখারি, হাদিস নং: ১৯৪)